VJRC Career Guidance Blog

Vijaygarh Jyotish Ray College | Affiliated to the University of Calcutta | NAAC Accredited | ISO 9001:2015 Certified

Career Options

রসায়ন বা ক্যামিস্ট্রিতে অনার্স পড়ার পর ক্যারিয়ার কী?

বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে কলেজ পড়ুয়া, এমনকি অভিভাবকদের মুখেও একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খায়- “ভবিষ্যতের কেরিয়ার কী?” আগেকারদিনে পড়াশোনা শিখে ভবিষ্যতে কীভাবে কত তাড়াতাড়ি অর্থ উপার্জন করা যায়, তা নিয়ে তেমন চিন্তাভাবনা করতে হতনা। কিন্তু যুগ পাল্টেছে, আর যুগের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টেছে চিন্তাভাবনাও। এখন ছোট্ট বয়স থেকেই কো্ন্ লাইন নিয়ে জীবনে তাড়াতাড়ি সফলতার মুখ দেখবে সন্তানরা, সেই চিন্তায় মগ্ন আজকের যুগের বাবা-মায়েরা। আর সেই দৌড়ে আজও বেশিরভাগ বাবা-মা এবং ছাত্রছাত্রীদের পছন্দের বিষয় বিজ্ঞান। বর্তমান শতাব্দীতে যেখানে বিজ্ঞানের জয়জয়কার সবর্ত্র, সেখানে বিজ্ঞানকে ভবিষ্যতের হাতিয়ার হিসাবে বেছে নেওয়াটাও যথেষ্টই যুক্তিসঙ্গত। এখন দ্রুত চাকরি পাওয়ার আশায় টেকনিক্যাল বা অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সের বিভিন্ন বিষয়ের উপর ছাত্রছাত্রীদের ঝোঁকই বেশি। তবে চিরাচরিত কিছু প্রধান প্রধান বিষয়ের চাহিদা আজও অম্লান। সেইরকমই বিজ্ঞানের এক প্রাচীন, অতিপরিচিত বিভাগ হল রসায়ন বা কেমিস্ট্রি। ভবিষ্যতে এই রসায়নে কিভাবে সফল কেরিয়ার গড়ে তোলা যায়, সেই কথাই আজ জানব আমরা।

রসায়ন বা কেমিস্ট্রি কী? এই বিষয়ের প্রয়োজনীয়তা কী?

কেমিস্ট্রি বা রসায়ন হল বিজ্ঞানের এক অপার মিস্ট্রি। জগতে যত ধরণের পদার্থ আছে, তাদের ধর্ম, বৈশিষ্ট্য, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া; সেই বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে তাদের কোন ক্ষেত্রে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তাদের থেকে আরও নতুন কি পদার্থ তৈরি করা যায়, তাদের সাহায্যে মানবজীবনকে আরও কত সহজতর ও উন্নতমানের করা যায়, তার হাতেকলমে প্রশিক্ষণের পাঠ।  গোটা জগতের প্রতিটি জিনিস অণু, পরমাণু, ইলেকট্রন, প্রোটন- এসব দিয়েই তৈরি; আর এই অণু-পরমাণুর সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয় এই রসায়ন। এককথায় কেমিস্ট্রি আমাদের স্বাস্থ্যসেবা, উৎপাদন, প্রযুক্তি, বায়োটেকনোলজি প্রভৃতি নানা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে উচ্চপ্রদানকারী ভূমিকার সুযোগ দেয়।

স্নাতক স্তরে কোথায় পড়া যায় রসায়ন?

দ্বাদশ শ্রেণীতে Pure science অর্থাৎ কেমিস্ট্রি, ফিজিক্স, অঙ্ক বা বায়োলজি থাকলে তবেই স্নাতক স্তরে রসায়ন নিয়ে অনার্স পড়া যায়। অনার্স স্তরে পাস-এ ফিজিক্স ও অঙ্ক নিতেই হয়। পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত প্রায় সব কলেজেই কেমিস্ট্রি অনার্স পড়ানো হয়। এছাড়াও রাজ্যের বাইরে অন্যান্য সেন্ট্রাল ও স্টেট ইউনিভার্সিটিগুলিতেও কেমিস্ট্রি পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। 

সাধারণ B.Sc. কোর্স ছাড়াও বর্তমানে দেশজুড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রচুর চাকরীমুখী কোর্সও করানো হয়। 

রসায়ন নিয়ে রাজ্য তথা দেশে কী ধরণের উচ্চশিক্ষা করা যায়?

  • রাজ্য ও দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে B.Sc.-এর পর M.Sc. এবং PhD করা যাবে।
  • IIT-এর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে Bsc-এর পর Msc করতে চাইলে ‘JAM’ পরীক্ষা দিতে হয়।
  • IISC Bengaluru, IISER ও IIT-এর যেকোনো শাখায় রসায়নে PhD করা যায়। এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে Integrated PhD-এরও (Msc-PhD ডুয়াল ডিগ্রি) কোর্স আছে।
  • NIT-এর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে PhD করা যায়।
  • Indian Institute of Engineering Science & Technology(IIEST) থেকেও Msc ও PhD করা যায়।(বিশদ বিবরণের জন্য ফলো করুন www.iiests.ac.in)
  • IIT Dhanbad-এ কেমিস্ট্রিতে Msc, অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রিতে MPhil করা যায়। (বিশদে জানতে চোখ রাখুন www.iitism.ac.in)। এখানে PhD-ও করা যায়।
  • Rajib Gandhi Institute of Petroleum Technology(RGIPT)-তে PhD-এর ব্যবস্থা আছে। (বিশদ বিবরণ পাবেন www.rgipt.ac.in)

এছাড়াও উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা করা যায় কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে বেশ কিছু নামকরা প্রতিষ্ঠানে। যেমন-

PhD-এর fellowship পাওয়ার জন্য NET পরীক্ষা উত্তীর্ণ হতে হয় বা GATE পরীক্ষায় ভাল স্কোর থাকতে হয়। স্টেট ইউনিভার্সিটিগুলিতে PhD করতে SET পাশ করতে হয়।

চাকরির বাজারে রসায়নের ছাত্রছাত্রীদের চাহিদা কেমন?

কেমিস্ট্রি বিষয়টি যেহেতু পদার্থের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন, এর বৈশিষ্ট্য এবং এর মধ্যে ঘটে চলা সকল পরিবর্তনের উপর কাজ করে; তাই গবেষণা, বিপণন, উৎপাদন শিল্প, বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন এবং শিক্ষার অনেক বিশাল ক্ষেত্রে রসায়ন ডিগ্রীধারীদের এক উজ্জ্বল কেরিয়ার গঠনের ক্ষেত্র রয়েছে।

বর্তমানে কেমিস্ট্রি গ্র্যাজুয়েটদের কাজের সুযোগ কিন্তু বেড়েছে অনেকাংশেই। এর অনেকগুলি কারণ আছে-

  • অধিকাংশ স্কুল-কলেজে এই বিষয়টিতে অনেক শূণ্য পদ তৈরি হয়েছে। 
  • প্রচুর চাকরির ট্রেনিং বা প্রবেশিকা পরীক্ষার ট্রেনিং ইন্সটিটিউশন গড়ে উঠেছে দেশ জুড়ে যেখানে দক্ষ রসায়ন শিক্ষকের চাহিদা তুঙ্গে।
  • কেন্দ্রীয় সরকারের ‘Make in India’ বা ‘Startup India’ প্রজেক্টও এই পালে হাওয়া লাগানোর কাজে অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে।
  • এছাড়াও রসায়নের স্নাতক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ওষুধ, সিমেন্ট, প্রসাধন প্রভৃতি শিল্পের কোয়ালিটি কন্ট্রোলে কেমিষ্ট হিসাবে কাজ করতে পারে।

রসায়ন পড়ে পাওয়া যায় এমন ২০টি চাকরির সম্পর্কে আজ আমরা বিশদে জানবঃ

১) একাডেমিক গবেষক/ শিক্ষকঃ-

একাডেমিক গবেষক বা শিক্ষকরা হলেন এক বিশেষ রসায়ন প্রশিক্ষক যাঁরা বিভিন্ন ধরণের পদার্থের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য, তাদের নিরাপদ ব্যবহার এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর উপায়, তার ফলাফল, অণু-পরমাণু, যৌগ, মৌল- এসব বিষয়ের বিস্তারিত শিক্ষা দেন ছাত্রছাত্রীদের।

আমাদের দেশে স্কুলে শিক্ষকতা করার জন্য Msc ডিগ্রীর প্রয়োজন ও স্কুলশিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। পশ্চিমবঙ্গে Msc ডিগ্রীর পাশাপাশি Bed ডিগ্রীও বর্তমানে বাধ্যতামূলক।

কলেজে শিক্ষকতা করার নূন্যতম যোগ্যতা হল Msc ডিগ্রী ও NET উত্তীর্ণ হওয়া। তবে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে অধ্যাপনার জন্য SET উত্তীর্ণ হতে হয়। সাম্প্রতিককালে NET বা SET-এর বদলে PhD ডিগ্রীপ্রাপ্তরাও কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে পড়াতে পারছেন। ONGC, Indian Oil, Geological Survey of India(GSI)-এর মত নামকরা বহুজাতিক সংস্থাগুলিতেও রয়েছে প্রচুর সুযোগ। 

একজন দক্ষ একাডেমিক গবেষক গড়ে প্রতি বছর ১,৪০,০০০ ডলার উপার্জন করতে পারেন।

২) বিশ্লেষণাত্মক রসায়নবিদঃ-

পদটির নামের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে কাজের গতি-প্রকৃতি। বিশ্লেষণাত্মক রসায়পনবিদদের প্রধান কাজ হল রসায়নের বিভিন্ন বিষয়ের বিস্তারিত বিশ্লেষ্ণ ও গবেষণা করা।

সম্মানসূচক ডিগ্রী আছে এমন একজন রসায়নবিদের বার্ষিক বেতন হতে পারে প্রায় ৫০,০০০-৮০,০০০ ডলার।

৩) বায়োটেকনোলজিস্ট / জৈবপ্রযুক্তিবিদঃ-

বায়োটেকনোলজি এই মুহূর্তে পৃথিবীর অন্যতম একটি প্রচলিত ও চরম সম্ভবনাময় ক্ষেত্র। জৈবিক সিস্টেম বা জীবন্ত প্রাণীর ব্যবহার বিভিন্ন পণ্যের বিকাশে খুবই সাফল্যের সাথে ব্যবহার করা যাচ্ছে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মাধ্যমে থেরাপিউটিক প্রোটিন ও অন্যান্য ওষুধ উৎপাদনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত এই বায়োটেকনোলজি। আর এইখানেই প্রয়োজন দক্ষ বায়োটেকনোলজিস্টের। 

একজন দক্ষ জৈবপ্রযুক্তিবিদ বছরে প্রায় ৭৫,০০০-৯০,০০০ ডলার উপার্জন করতে পারেন।

৪) কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারঃ-

কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বা রাসায়নিক প্রকৌশল হল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর এমন একটি শাখা যা প্রাকৃতিক এবং পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের সাথে জীবনবিজ্ঞান, (যেমন জীববিজ্ঞান, মাইক্রোবায়োলজি), গণিত, অর্থনীতি, ডিজাইন, উৎপাদন, রূপান্তর, বিকাশ, পরিবহন, পরিচালনা, শিল্প প্রক্রিয়া প্রভৃতি বিষয়গুলির মেলবন্ধন ঘটায়। এককথায় যেকোনো কাঁচামালকে ব্যবহারযোগ্য মূল্যবান পণ্যে পরিণত করে। তবে এই বিভাগে কাজের জন্য রসায়নের ডিগ্রীর পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং-এও স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করতে হবে এবং নূন্যতম চার বছরের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন।

একজন দক্ষ কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের বার্ষিক বেতন প্রায় ৮৬,০০০ ডলার।

৫) ক্লিনিক্যাল সায়েন্টিস্ট/ বায়োকেমিস্টঃ-

বায়োকেমিষ্ট্রি হল রসায়নে এমন এক বিভাগ যেখানে জীবন্ত জীবের আণবিক স্তরে ঘটে চলা বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়া ও রূপান্তরগুলির অধ্যয়ন হয় এবং তা মানবজীবনের নানা কাজে ব্যবহৃত হয়। মূলতঃ ওষুধ তৈরির কাজে এটি ব্যবহৃত হয়। হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষিদপ্তর, শিক্ষাদপ্তর, ফরেনসিক ল্যাব ইত্যাদি জায়গায় কাজের সুযোগ রয়েছে ক্লিনিক্যাল সায়েন্টিস্টদের।

৬) ফার্মাকোলজিস্টঃ-

ফার্মাকোলজি হল মানবশরীরে কোনও ওষুধ কীভাবে কাজ করে তার অধ্যয়ন। পরীক্ষাগারে টিস্যু ও কোষের নমুনা অধ্যয়ন করে নতুন ওষুধ প্রস্তুত করা এবং তার বিকাশ ঘটানোই হল ফার্মাকোলজিস্টদের প্রধান কাজ। এছাড়াও মানুষের উপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে সুপারিশ করা, গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল, প্রতিবেদন এবং তার নথিভুক্তকরণ- এসবই একজন ফার্মাকোলজিস্টকে সামলাতে হয়।

একজন ফার্মাকোলজিস্টের বার্ষিক উপার্জন গড়ে প্রায় ৯০,০০০ ডলার।

৭) টক্সিকোলজিস্টঃ-

প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট বিষ, জীবন্ত প্রাণীর মধ্যে অবাঞ্ছিত যে প্রভাব বিস্তার করে সে বিষয়ের উপর অধ্যয়নই হল টক্সিকোলজি। বিষের ক্ষতিকারক প্রভাব ও তাদের বিষাক্ততা নির্ধারণ করতে সঠিক রাসায়নিক পদার্থকে কাজে লাগানোই হল টক্সিকোলজিস্টের কাজ। হাসপাতাল, পরিবেশ সংস্থা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিভাগ, ফরেনসিক ল্যাবরেটরি প্রভৃতি জায়গায় কাজের সুযোগ রয়েছে টক্সিকোলজিস্টদের।

৮) ফরেনসিক বিশেষজ্ঞঃ-

অপরাধমূলক কাজের ক্ষেত্রে ভৌত প্রমাণ থেকে তথ্য উন্মোচন করতে ফরেনসিক বিভাগে রসায়নের ব্যবহার অপরিহার্য, আর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের কদরও পাহাড়প্রমাণ। কখন, কার দ্বারা, কীভাবে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তা জানতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের রক্ত, DNA, বারুদের অবশিষ্টাংশ বিশ্লেষণ করতে হয়। পুঙ্খানুপুঙ্খ ডকুমেন্টেশন, অপরাধের গতি-প্রকৃতি নির্ধারণ- এগুলিও তাঁদের কাজের মধ্যেই পড়ে। রাজ্য বা স্থানীয় পুলিশ বিভাগ, চিকিৎসা পরীক্ষকের অফিস, ফরেনসিক ল্যাবগুলিতে এই পদে রসায়নের কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়োগ করা হয়। 

গড়ে তাঁরা বার্ষিক প্রায় ৭৯,০০০ ডলার উপার্জন করতে পারে।

৯) ন্যানোপ্রযুক্তিবিদঃ-

ন্যানোপার্টিকেলসকে কাজে লাগিয়ে আরও উন্নত প্রযুক্তি গড়ে তোলাই হল ন্যানোপ্রযুক্তিবিদ্-দের প্রধান কাজ। তবে এক্ষেত্রে স্নাতকোত্তর, ডক্টরেট, PhD, প্রভৃতি উচ্চতর ডিগ্রী ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে ন্যানোপ্রযুক্তিবিদ্-দের নিয়োগ করা হয়। 

গড়ে এঁদের বার্ষিক বেতন আনুমানিক ১,০০,০০০ ডলার।

১০) মহামারী বিশেষজ্ঞ/ এপিডেমিওলজিস্টঃ-

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নানা ইভেন্টের বন্টন, জনস্বাস্থ্য সমস্যার নির্ধারণ ও সেগুলি নিয়ন্ত্রণ করাই হল এপিডেমিওলজিস্টদের কাজ। 

এঁরাও বছরে গড়ে প্রায় ৬০,০০০ ডলার উপার্জন করেন।

১১) ফার্মেসি টেকনিশিয়ানঃ-

হাসপাতাল বা ফার্মাকিউটিক্যালসগুলিতে রোগীদের প্রেসক্রিপশন চেকিং, ওষুধ প্রস্তুত করা, সেগুলি সরবরাহ করা প্রভৃতি কাজে ফার্মাসিস্টদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন এঁরা। 

বার্ষিক উপার্জন প্রায় গড়ে ২০,০০০ ডলার।

১২) খাদ্য রসায়নবিদঃ-

খাদ্যের জৈবরাসায়নিক প্রকৃতি, তাদের বৈশিষ্ট্য, শরীরে তাদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, তাদের রাসায়নিক গঠনের বিশ্লেষণ, মান পরীক্ষা- এসব কিছু সম্পন্ন করেন খাদ্য রসায়নবিদ। 

বার্ষিক উপার্জন গড়ে প্রায় ৬৮,০০০ ডলার।

১৩) সামুদ্রিক রসায়নবিদ বা  সমুদ্রবিজ্ঞানীঃ-

বিশ্বের সকল সাগর, মহাসাগরের রাসায়নিক গঠন ও প্রক্রিয়ার অধ্যয়নই হল সামুদ্রিক রসায়ন। 

সমুদ্রবিজ্ঞানীরা বার্ষিক গড়ে প্রায় ৪০,০০০ ডলার আয় করেন।

১৪) প্রধান বিজ্ঞানীঃ-

যেকোনো পরীক্ষা বা গবেষণায় এই প্রধান বিজ্ঞানীরা নেতৃত্ব দেন। গবেষণার অগ্রগতি, পণ্যের গুণমান পরীক্ষা, প্রযুক্তি পর্যবেক্ষণ, গবেষণার কৌশল তৈরি করা, পরিকল্পনা করা ও বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগুলি সম্পাদন করেন এঁরা।

১৫) ফার্মাকিউটিক্যালস পেশাদারঃ-

বিভিন্ন ওষুধ বাজারজাত করা, ক্লায়েন্টদের চাহিদা অ্যাক্সেস করা, পণ্যের নমুনা সরবরাহ, তথ্য আদানপ্রদান প্রভৃতি কাজ করেন এই পেশাদাররা।

বার্ষিক আয় আনুমানিক ১,১০,০০০ ডলার।

১৬) বস্তুবিজ্ঞানীঃ-

বিভিন্ন পণ্যের উন্নতি ও বিকাশ, বিজ্ঞানীদের ব্যর্থ উদ্ভাবনের উপর গবেষণা, রাসায়নিক কাঁচামাল যুক্ত করা- এসবই বস্তুবিজ্ঞানীর কাজ। 

এঁরা বার্ষিক গড়ে প্রায় ৯০,০০০ ডলার উপার্জন করেন।

১৭) চিকিৎসা সহকারীঃ-

স্বাস্থ্যসেবার ক্লিনিক্যাল ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন এই চিকিৎসা সহকারীরা। এঁরা অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময় নির্ধারণ করেন, রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য ও Case History-এর রেকর্ড বজায় রাখেন, ডাক্তারদের পরীক্ষায় সহায়তা করেন।

এঁদের বার্ষিক আয় বছরে প্রায় ৩৫,০০০ ডলার উপার্জন করেন।

১৮) ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি টেকনোলজিস্টঃ-

মানবশরীরের টিস্যু, তরল বা অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হল এই রসায়নবিদদের কাজ। তবে এই পদে কাজ করার জন্য শুধুমাত্র রসায়নে ডিগ্রী যথেষ্ট নয়। পাশাপাশি ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানের দু’বছরের সহযোগী ডিগ্রী বা সার্টিফিকেশন পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। হাসপাতাল, ল্যাব, চিকিৎসকদের অফিস, বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি জায়গায় কর্মসংস্থান মেলে এই টেকনোলজিস্টদের।

এঁদের বার্ষিক আয় প্রায় ৪০,০০০ ডলার।

১৯) প্রসাধনী রসায়নবিদঃ-

কসমেটিক বা প্রসাধনী রসায়নবিদরা Beauty products তৈরি করেন। বিভিন্ন ক্রিম, লোশন, ডিওডোরেন্ট, পাউডার, মেকআপ প্রোডাক্ট- এসবই তৈরি হয় এঁদের তত্ত্বাবধানে। এছাড়াও গ্রাহকদের কি চাহিদা, নিত্যনতুন কি প্রোডাক্ট আনা যায়-সেগুলির গবেষণা ও পর্যালোচনা, রঞ্জকের উপর পরীক্ষানিরীক্ষা, pH রিডিং পরিচালনা, প্রোডাক্টগুলির গুণমান ও সুরক্ষার জন্য প্রোটোটাইপ পরীক্ষা করা, উৎপাদন প্রক্রিয়া চলাকালীন জীবাণুমুক্ত কাজের পরিবেশ বজায় রাখা- এসব কিছুই এই রসায়নবিদদের কাজ। 

প্রসাধনী রসায়নবিদরা গড়ে বছরে প্রায় ৪০,০০০ ডলার আয় করেন।

২০) ভূ-রসায়নবিদঃ-

রসায়ন বিজ্ঞানের অন্যতম ইন্টারেস্টিং বিভাগ হল ভূ-রসায়ন। পৃথিবীর রাসায়নিক গঠন প্রক্রিয়া ও অন্যান্য ভৌত ধর্মগুলির অধ্যয়ন, খনিজ রাসায়নিক উপাদানগুলির উত্তোলন ও বন্টন, মাটি ও জলের পরীক্ষা- এসবই ভূ-রসায়নবিদদের প্রধান কাজ।

বছরে এঁদের উপার্জন প্রায় ১,০০,০০০ ডলার।

সুতরাং এটা খুবই স্পষ্ট যে, রসায়নের প্রকৃত রসাস্বাদন যারা করতে পারবে, ভবিষ্যত তাদের খুবই উজ্জ্বল। আগামী দিনে রসায়নবিদদের সামগ্রিক কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে হু হু করে। সেই সুদূর প্রাচীনকালে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ, প্রিয়দারঞ্জন রায় প্রমুখ বিজ্ঞানীরা রসায়ন শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছিলেন। সেই যাত্রা আজও থামেনি; আজও ভারতবর্ষে রসায়নচর্চা একইভাবে সমাদৃত।